দ্বিতীয় প্রকল্পে স্মার্টকার্ড প্রতি ব্যয় হচ্ছে ১৬০ টাকা
এবারে স্মার্টকার্ড প্রতি ব্যয় হচ্ছে ১৬০ টাকা। স্মার্টকার্ড তথা আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর ইনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) দ্বিতীয় প্রকল্পের অধীন ৩ কোটি ভোটারের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮০ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে আইডিইএ প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল কাদের জানিয়েছেন, আইডিইএ এর ২য় পর্যায়ে পরিকল্পনা করা হয়েছে প্রকল্পে তিন কোটি স্মার্টকার্ড পারসোনালাইজেশন ও বিতরণের ।আর এজন্য সংস্থান করা হয়েছে ৪৮০ কোটি টাকা।
নাগরিকদের উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার লক্ষ্যে ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ২০১১ সালে আইডিইএ প্রকল্পটি হাতে নেয়। সংস্থাটি দীর্ঘ চার বছর নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে স্মার্টকার্ড তৈরির দিকে এগোয়।
নির্বাচন কমিশন ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান অবার্থার টেকনোলজিসের সঙ্গে ওই সময়ের ৯ কোটি ভোটারের জন্য নয় কোটি ব্ল্যাংক স্মার্টকার্ড তৈরি করে দিতে চুক্তি করে । আর এর মেয়াদ ছিল ১৮ মাস। পরবর্তীতে মেয়াদ বাড়ানোর পরেও প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত চুক্তিতে উল্লেখিত কার্ড সরবরাহ করতে পারেনি। ফলে অবার্থারের কাছ থেকে ইসি সে বছরের শেষের দিকে জরিমানা আদায় করে।

আর একই সঙ্গে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে স্মার্টকার্ড তৈরি করে নিতে গঠন করা হয় একটি টেকনিক্যাল কমিটি। যে কমিটিতে কাজ করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনামুল কবীর, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী ।
এ কমিটি সবকিছু বিচার-বিবেচনা করে সুপারিশ করে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) কাছ থেকে স্মার্টকার্ড তৈরি করে নেওয়ার জন্য । তার ভিত্তিতেই বিএমটিএফ’র সঙ্গে একটি চুক্তিতে যায় নির্বাচন কমিশন। দেশীয় এ প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে স্মার্টকার্ড সরবরাহ করছে ।
প্রতি বছর ৪ থেকে ৫ মিলিয়ন কার্ড তাদের কাছ থেকে নেওয়ার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে। আর এজন্য কার্ডপ্রতি দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১.৬ মার্কিন ডলার।
অবার্থার ১.৫১ ডলার দরে ৭ কোটি ৭৩ লাখ কার্ড সরবরাহ করতে পেরেছিল বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা । সেই মোতাবেক কার্ড ঘাটতি ছিল পূর্বের ১ কোটি ২৭ লাখ নাগরিকের। আবার কয়েক বছরে ভোটার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ১৭ লাখ। সব মিলিয়ে আরও প্রায় তিন কোটির মতো কার্ড তৈরি এবং তাতে নাগরিকের তথ্য ইনপুট করে বিতরণে যেতে হবে।
আর এজন্য হাতে নেওয়া হয়েছে আইডিইএ দ্বিতীয় প্রকল্প । আর এই প্রকল্পের সরকার ১ হাজার ৮০৫ কোটি টাকার অনুমোদনও দিয়েছে । ফলে এ ক্ষেত্রে খুব সহসাই নতুনদের মাঝে স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হচ্ছে।
অত্র প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল কাদের জানিয়েছেন, খুব শিঘ্রই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। আমরা ২০২৫ সালের মধ্যে নিবন্ধিত সব নাগরিককে স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য সব পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছি।
ইসির সার্ভারে ২০২৫ সাল নাগাদ আরও প্রায় চার কোটির মতো ভোটার যুক্ত হবে। সেই সঙ্গে ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী ভোটারদেরও স্মার্টকার্ড দেবে ইসি। সেই হিসেবে এ সময়ের মধ্যে সংস্থাটিকে আরও প্রায় ১০ কোটির মতো স্মার্টকার্ড তৈরি ও বিতরণে যেতে হবে।
সুত্র বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম